‘উমার ইবনুল খাত্তাব রদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “প্রত্যেক কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল।...
সহীহ
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।

এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন যে, আমলসমূহ নিয়তের উপর নির্ভরশীল। ইবাদত ও লেনদেনসহ সকল কাজের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযো...
‘আয়িশা রদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আমাদের এ শরী‘আতে নাই, এমন কিছু চালু ক...
সহীহ
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু আবিষ্কার করলো, অথবা এমন কোনো আমল করলো যার দলীল কুরআন ও...
‘উমার ইবনুল খত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “একবার আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে ছিলাম। এমন সময় একজন লোক...
সহীহ
এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।

‘উমার রদিয়াল্লাহু ‘আনহু এ হাদীসে সংবাদ দিয়েছেন যে, একবার জিবরীল আলাইহিস সালাম সাহাবীদের কাছে অপরিচিত একজন মানুষের আকৃতিতে আগমন করলেন। তার বৈশিষ্ট্য ছি...
ইবন `উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: «بُنِيَ الإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَاد...
সহীহ
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামকে সুদৃঢ় পাঁচটি ভিত্তির উপর তুলনা করেছেন, যা উক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। ইসলামের অন্যান্য বিধানগুলো যেন উক্ত...
মু‘আয ইবনু জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে ‘উফাইর নামক গাধার উপরে ছিলাম। তখন তিনি বল...
সহীহ
মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি (বুখারী ও মুসলিম)।

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখানে বান্দার উপরে আল্লাহর হক এবং আল্লাহর উপরে বান্দার হকের বর্ণনা করেছেন। আর বান্দার উপরে আল্লাহর হক হচ্ছে: তারা...

এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন যে, আমলসমূহ নিয়তের উপর নির্ভরশীল। ইবাদত ও লেনদেনসহ সকল কাজের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য। সুতরাং যে ব্যক্তি তার আমলের দ্বারা শুধু পার্থিব উপকারিতা লাভের উদ্দেশ্য করবে সে শুধু উক্ত উপকারিতাই লাভ করবে, কোন সাওয়াব প্রাপ্ত হবে না। অপরদিকে যদি কেউ তার আমলের দ্বারা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য উদ্দেশ্য করলে, সে উক্ত আমলের দ্বারা সাওয়াব ও প্রতিদান লাভ করবে; যদিও কাজটি সাধারণ কোন কাজ হয়, যেমন খাওয়া বা পান করা। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাজের ক্ষেত্রে নিয়তের প্রভাব বুঝাতে একটি উদাহরণ পেশ করেছেন; যদিও বাহ্যিক দৃষ্টিতে কাজ দুটি সমান। তিনি বর্ণনা করেন যে, যে ব্যক্তি স্বীয় দেশ ত্যাগ করে হিজরত করবে এবং সে উক্ত হিজরতের দ্বারা তার রবের সন্তুষ্টি তালাশ করবে, তাহলে তার হিজরত শরী‘য়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য হিজরত বলে বিবেচিত হবে এবং তার নিয়াতের বিশুদ্ধতার কারণে সে সাওয়াবের অধিকারী হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি পার্থিব সুযোগ-সবিধার জন্য যেমন, ধন-সম্পদ, সুনাম-সুখ্যাতি, ব্যবসা-বাণিজ্য বা স্ত্রী ইত্যাদি লাভের উদ্দেশ্যে হিজরত করবে, তবে সে উক্ত হিজরতের দ্বারা শুধু পার্থিব উদ্দেশ্যই হাসিল করবে, এতে তার কোন সাওয়াব এবং পুরস্কার প্রাপ্তি হবে না।
Hadeeth details

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু আবিষ্কার করলো, অথবা এমন কোনো আমল করলো যার দলীল কুরআন ও হাদীসে নেই, তবে সেসব আমল আবিস্কারকারীর দিকে প্রত্যাখ্যাত হবে এবং আল্লাহর কাছে অগ্রহণযোগ্য।
Hadeeth details

‘উমার রদিয়াল্লাহু ‘আনহু এ হাদীসে সংবাদ দিয়েছেন যে, একবার জিবরীল আলাইহিস সালাম সাহাবীদের কাছে অপরিচিত একজন মানুষের আকৃতিতে আগমন করলেন। তার বৈশিষ্ট্য ছিল এমন যে, তার পরিধানের কাপড় ছিল সাদা ধবধবে, তার মাথার কেশ ছিল কালো কুচকুচে, সফরের ক্লান্তি, চেহারায় ধুলোবালি, চুল এলামেলো বা কাপড় নোংরা না থাকায় তার মধ্যে সফরের কোন চিহ্ন ছিল না। আবার আমরা উপস্থিত ব্যক্তিরাও তাকে চিনতে পারলাম না অথচ তারা সকলেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে বসা ছিলেন। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে এসে শিক্ষার্থীর ন্যায় বসলেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি তাকে ইসলামের রুকনসমূহের ব্যাপারে উত্তর দিলেন, যার অন্তর্ভুক্ত বিষয় ছিল: দুটি সাক্ষ্যের স্বীকৃতি, পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সংরক্ষণ, প্রাপ্যদের জন্য যাকাত আদায় করা, রমাযান মাসের সাওম পালন করা এবং সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য ফরজ হজ পালন করা। অতপর প্রশ্নকারী লোকটি বললেন: আপনি সঠিক উত্তর দিয়েছেন। তার কথা শুনে সাহাবীগণ আশ্চর্যান্বিত হলেন; কেননা তার প্রশ্ন দ্বারা বুঝা যাচ্ছিল তিনি এসব বিষয় জানতেন না; কিন্তু তিনিই প্রশ্ন করেছেন আর তিনিই তার সত্যায়ন করছেন। অতপর আগন্তুক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ঈমান সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। তিনি ঈমানের ছয়টি রুকন উল্লেখ করেন, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বিষয় ছিল: আল্লাহর অস্তিত্ব, তাঁর গুণাবলী, তার সকল কাজ যেমন সৃষ্টিতে তাঁর একত্ব প্রতিষ্ঠা করা, ইবাদাত পাওয়ার ক্ষেত্রেও তিনি একক তা সাব্যস্ত করা। ফিরিশতাগণকে আল্লাহ নূর দ্বারা সৃষ্টি করছেন, তারা সম্মানিত বান্দাহ এবং তাদেরকে যা আদেশ করা হয় সে ব্যাপারে তারা কখনো আল্লাহর অবাধ্য হন না। এছাড়াও সকল নবী-রাসূলদের প্রতি নাযিলকৃত কিতাবসমূহের উপর ঈমান আনা,যেমন: কুরআন, তাওরাত ও ইঞ্জিল ইত্যাদি। রাসূলগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর দ্বীনের প্রচারক, যেমন: নূহ, ইব্রাহীম, মূসা, ঈসা, এবং তাদের সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং অন্যান্য নবী-রাসূলগণের উপরে ঈমান আনা। আখিরাতের প্রতি ঈমান আনা, যার অন্তর্ভুক্ত হলো মৃত্যুর পরে যা কিছু ঘটবে যেমন: কবর, বারযাখী জীবন, এছাড়াও মৃত্যুর পরে মানুষকে হিসাব-নিকাশের জন্য পুনরুত্থিত করা হবে, এরপর তার গন্তব্য হয়ত জান্নাতে অথবা জাহান্নামে। এছাড়াও এ বিষয়ে ঈমান আনা, আল্লাহ তা‘আলা প্রতিটি বিষয়কে নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তাঁর পূর্ব ইলম অনুযায়ী, হিকমত ও উক্ত বিষয়সমূহ সম্পর্কে তাঁর লিখন ও ইচ্ছা অনুসারে, আর তিনি যা যেভাবে তাঁর পূর্ব ইলেম অনুসারে তাকদীর করেছেন সেগুলো সেভাবেই সংঘটিত হওয়া। অতপর আগন্তুক তাকে ইহসান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন: ইহসান হলো, এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগী করা যেন সে আল্লাহকে দেখছে। যদি তার এ পর্যায়ে পৌঁছা সম্ভব না হয়, তবে সে এভাবে ইবাদাত করবে যে, তিনি তাকে দেখছেন। প্রথম স্তর হলো মুশাহাদার স্তর যা সর্বোচ্চ স্তর। আর দ্বিতীয় স্তর হলো মুরাকাবার স্তর। অতপর আগন্তুক তাকে কিয়ামাত সস্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: কিয়ামাত সম্পর্কিত জ্ঞান মহান আল্লাহর গোপনীয় বিষয়সমূহের অন্যতম। যা তিনি ব্যতীত সৃষ্টির অন্য কেউ জানে না। সুতরাং এ বিষয়ে জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি ও জিজ্ঞাসাকারী কেউই অবহিত নন। অতপর লোকটি তাঁকে কিয়ামাতের আলামত সস্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করলেন যে, কিয়ামাতের আলামতের অন্যতম হলো: অধিক দাসী ও তাদের সন্তানের আধিক্য, সন্তান কর্তৃক তাদের মায়ের অধিক অবাধ্যতা, যারা তাদের জননীদের সাথে দাসীর মতো আচরণ করবে, শেষ যামানায় নগ্নপদ, বিবস্ত্রদেহ, দরিদ্র মেষপালকদের জন্য দুনিয়া বিস্তৃত হয়ে যাবে; ফলে তারা বিরাট বিরাট অট্টালিকা নির্মাণ ও এর সৌন্দর্য নিয়ে গর্ব করবে। অতপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবীদেরকে সংবাদ দিলেন যে, প্রশ্নকারী ছিলেন জিবরীল ‘আলাইহিস সালাম, তিনি সাহাবীদেরকে সরল-সঠিক দীন শিক্ষা দিতে আগমন করেছিলেন।
Hadeeth details

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামকে সুদৃঢ় পাঁচটি ভিত্তির উপর তুলনা করেছেন, যা উক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। ইসলামের অন্যান্য বিধানগুলো যেন উক্ত ভিত্তির পরিপূরক ও পূর্ণতাদানকারী। এসব রুকনের প্রথমটি হলো: দুটি সাক্ষ্য: আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো মাবূদ নেই এবং নিশ্চয় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল -এ কথার সাক্ষ্য দান করা। এ দুটি কালিমার সাক্ষ্য দেওয়া মূলত একটি রুকন। একাংশ আরেক অংশ থেকে আলাদা হয় না। আল্লাহর একত্বের স্বীকৃতি ও তিনি একমাত্র ইবাদতের উপযুক্ত ।এ স্বীকৃতি সহকারে বান্দাহ এ কালিমা তার মুখে উচ্চারণ করবে, এর দাবি অনুযায়ী আমল করবে এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতের উপর ঈমান আনায়ন ও তাঁর আনুসরণ করবে । দ্বিতীয় রুকন: সালাত কায়েম করা। আর তা হলো দিনে রাতে পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাত তার শর্তাবলি, রুকন ও ওয়াজিবসমূহ সহকারে আদায় করা। সেগুলো হলো: ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব ও ইশা। তৃতীয় রুকন: ফরয যাকাত দেয়া। এটি মূলত ধন-সম্পদের উপর ফরযকৃতএকটি ইবাদত।শরী‘আহ নির্দিষ্ট নিসাব পরিমাণ সম্পদ কারো কাছে থাকলে,যাকাত পাওয়ার হকদারদেরকে প্রদান করা ফরয করেছে। চতুর্থ রুকন: হজ করা। তা হলো আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে হজের কার্যাবলি পালনের জন্যে মক্কায় গমন করা। পঞ্চম রুকন: রমযানের সাওম পালন করা। আর তা হলো ইবাদতের নিয়তে রমযান মাসে ফজরের শুরু থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য, পানীয় ও অন্যান্য সাওম ভঙ্গকারী বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকা।
Hadeeth details

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখানে বান্দার উপরে আল্লাহর হক এবং আল্লাহর উপরে বান্দার হকের বর্ণনা করেছেন। আর বান্দার উপরে আল্লাহর হক হচ্ছে: তারা শুধুমাত্র আল্লাহরই ইবাদাত করবে এবং তার সাথে কোন বস্তুকে শরীক করবে না। আর আল্লাহর উপরে বান্দার হক হচ্ছে, তাওহীদপন্থীদের মধ্যে যারা তাঁর সাথে শিরক করবে না তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন না। তারপরে মু‘আয বলেছেন: হে আল্লাহর রাসূল! আমি কী মানুষকে এ সুসংবাদ দিব না, যাতে তারা খুশি হতে পারে এবং এর ফযিলতে সন্তুষ্ট হতে পারে? তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নিষেধ করলেন, এ আশঙ্কায়, যেন তারা শুধু এটার উপরেই নির্ভর না করে।
Hadeeth details

মু‘আয বিন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একবার নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিছনে তাঁর সাওয়ারীতে আরোহী ছিলেন। তখন তিনি তাঁকে ডেকে বললেন: হে মু‘আয! এভাবে তিনি তাকে তিনবার ডাকলেন। তিনি যে বিষয়টি অচিরেই মু‘আযকে বলবেন, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় তিনি এরূপ তিনবার করলেন। প্রতিবারই মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু উত্তরে বললেন: আমি হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌ এবং আপনার আদেশ পালনের জন্য প্রস্তুত। অর্থাৎ হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার ডাকে প্রতিবারই উত্তর দিচ্ছি যথাযত উত্তর এবং আপনার ডাকে সাড়া দিয়ে আমি সৌভাগ্য কামনা করছি। অতপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সংবাদ দিলেন: যে ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে, মিথ্যাবাদী না হয়ে সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মাবূদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল- এ অবস্থায় সে মারা গেলে তার জন্য আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নাম হারাম করে দিবেন। মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ সংবাদ মানুষের মাঝে প্রচার করতে অনুমতি চাইলেন, যাতে তারা আনন্দিত হয় এবং সুসংবাদপ্রাপ্ত হয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশংকা করলেন যে, তাহলে তারা এর ওপর ভরসা করে বসে থাকবে এবং আমল কমিয়ে দিবে। মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু জীবনভর এ হাদীসটি কাউকে বর্ণনা করেন নি। তবে মৃত্যুর সময় এ হাদীসটি বর্ণনা করে গেছেন, যাতে ইলম গোপন রাখার গুনাহ না হয়।
Hadeeth details

এ হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন, যে ব্যক্তি মুখে বলল ও সাক্ষ্য দিলো, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য মাবূদকে অস্বীকার করলো, ইসলাম ব্যতীত অন্য সব ধর্ম থেকে নিজেকে মুক্ত ঘোষণা করল, তার জান ও মাল মুসলিমদের জন্যে হারাম। অতএব, আমরা তার বাহ্যিক আমল দেখেই বিচার করব। সুতরাং তার ধন-সম্পদ হরণ করা যাবে না এবং তার রক্তপাতও ঘটানো যাবে না। তবে সে কোন অন্যায় বা অপরাধে জড়িত হলে ভিন্ন কথা। তখন সেসব অপরাধের শাস্তি ইসলামী শরী‘য়াহ নিশ্চিত করবে। আল্লাহ তার হিসাব নিকাশ কিয়ামতের দিন গ্রহণ করবেন। যদি সে সত্যবাদী হয়, তবে সে পুরস্কৃত হবে। আর যদি মুনাফিক হয়, তবে আল্লাহ তাকে শাস্তি দিবেন।
Hadeeth details

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক ব্যক্তি দুটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন: প্রথমটি হচ্ছে: যা জান্নাতে প্রবেশ করাকে আবশ্যক করে, আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে: যা জাহান্নামে প্রবেশ করাকে আবশ্যক করে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন: যে গুণটি জান্নাতকে আবশ্যক করে, তা হচ্ছে: মানুষ মারা যাবে একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা এবং আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা অবস্থায়। আর যে দোষ জাহান্নামকে আবশ্যক করে, তা হচ্ছে: একজন মানুষ এমন অবস্থায় মারা যাবে যে, সে আল্লাহর সাথে কোন কিছু কে শরীক করবে। ফলে সে আল্লাহর উলূহিয়্যাত, রুবুবিয়্যাত, সুন্দর নামসমূহ ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে সমকক্ষ ও সাদৃশ্য নির্ধারণ করবে।
Hadeeth details

নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্যে যা করা ফরজ, তার কোন কিছু অন্যের জন্য করবে,যেমন আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে ডাকা, তাঁর নিকট ছাড়া অন্যের কাছে সাহায্য চাওয়া এবং এ অবস্থায় মারা যায়, তবে অবশ্যই সে জাহান্নামের অধিবাসী। আব্দুল্লাহ ইবন মাস‘ঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সংযোজন করেন: যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করে মারা যায়, তার ঠিকানা জান্নাত।
Hadeeth details

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মু‘আয ইবনু জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে ইয়ামেনে আল্লাহর পথে একজন দাওয়াত দানকারী ও শিক্ষক হিসেবে প্রেরণ করেন তখন তিনি তাকে বর্ণনা দেন যে, তিনি অচিরেই সেখানকার খৃস্টান সম্প্রদায়ের সম্মুখীন হবেন। যাতে তিনি তাদের ব্যাপারে প্রস্তুতি নিতে পারেন। অতপর তিনি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো শ্রেণীক্রমে বর্ণনা করেন। তিনি সর্বপ্রথম তাদের কে আক্বীদা সংশোধনের দাওয়াত দিবেন। তারা এ কথার সাক্ষ্য দিবে যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মাবূদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল। কেননা তারা এ কথার সাক্ষ্য দিয়ে ইসলামে প্রবেশ করবে। তারা যখন এ সাক্ষ্য মেনে নিবে তখন তাদেরকে সালাত কায়েমের আদেশ দিবে। কেননা তাওহীদের পরে সালাত হলো সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ আবশ্যকীয় ইবাদত। তারা যদি সালাত কায়েম করে তবে তাদেরকে তাদের সম্পদের যাকাত তাদের মধ্যকার দরিদ্র মানুষেকে দেওয়ার আদেশ দিবে। অতপর তিনি তাকে তাদের সর্বোত্তম সম্পদ যাকাত হিসেবে গ্রহণ করতে সতর্ক করেন। কেননা ওয়াজিব হলো মধ্যম মানের সম্পদ যাকাত দিবে। অতপর তিনি তাকে যুলুম থেকে বিরত থাকতে অসিয়াত করেন। যাতে মাযলুম ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে বদদু‘আ না করে। কেননা, তার (বদদু‘আ) আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য।
Hadeeth details

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসে বর্ণনা করেছেন যে, কিয়ামতের দিন তাঁর শাফাআত দ্বারা সর্বাধিক সৌভাগ্যশালী ঐ ব্যক্তি হবে যে খালেস অন্তর থেকে বলে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত কোন প্রকৃত মাবূদ নেই এবং সে শিরক ও রিয়া থেকে মুক্ত থাকবে।
Hadeeth details

নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদীসে সংবাদ দিয়েছেন, ঈমানের রয়েছে কতিপয় শাখা-প্রশাখা ও বৈশিষ্ট্য। সেগুলো কর্ম , আক্বীদাহ ও কথাকে অন্তর্ভুক্ত করে। ঈমানের সর্বোচ্চ ও সর্বোত্তম বৈশিষ্ট্য হলো: (لا إله إلا الله) ‘আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো সত্য ইলাহ নেই।’ এ কালিমার অর্থ জেনে বুঝে এবং এর দাবী অনুযায়ী আমল করত: উক্ত কথা বলা। এর অর্থ হলো আল্লাহই একমাত্র ইলাহ, তিনি এক ও অদ্বিতীয়, সকল ইবাদতের তিনিই একমাত্র অধিকারী, তিনি ব্যতীত কেউ ইবাদতের যোগ্য নয়। ঈমানের সর্বনিম্ন আমল হলো রাস্তায় যেসব জিনিস মানুষকে কষ্ট দেয় তা অপসারণ করা। অতপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন যে, লজ্জাশীলতা ঈমানের একটি শাখা। এটি এমন একটি চরিত্র যা ভালো কাজ করতে এবং খারাপ কাজ পরিহার করতে অনুপ্রেরণা যোগায়।
Hadeeth details